প্রশ্নঃ আইনগত ব্যাখ্যা (Judicial interpretation) কাকে বলে?
আইনগত ব্যাখ্যা (Judicial Interpretation): সংসদ বা পার্লামেন্ট আইন প্রণয়ন করে এবং বিচারকার্য পরিচালনার সময় আদালত সেগুলোর ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে। আইন যে ভাষায় বা শব্দাবলীতে প্রকাশিত হয়, সেই ভাষা বা শব্দাবলীর মাধ্যেমে আইনের অর্থ নির্ণয় করার প্রক্রিয়াকে আইনগত ব্যাখ্যা বলে ৷
স্যামন্ডের মতে, “ব্যাখ্যা দু'ধরনের হতে পারে যথাঃ বৈয়াকরণিক ব্যাখ্যা ও যুক্তিভিত্তিক ব্যাখ্যা। এগুলোকে যথাক্রমে আক্ষরিক ব্যাখ্যা এবং কার্যভিত্তিক ব্যাখ্যা বলা হয়।” আইনগত ব্যাখ্যার উদ্দেশ্যে আইনের আক্ষরিক ব্যাখ্যা অনুসরণ করা উচিত নয় বলে স্যামও মনে করেন ৷ কারণগুলো হচ্ছে প্রথমত, আইনের ভাষা দ্ব্যর্থক বা অস্পষ্ট হতে পারে। দ্বিতীয়ত, আইনের ভাষার অসঙ্গতি থাকতে পারে। তৃতীয়ত, এটা অসম্পূর্ণ হতে পারে বা এমন কোন শূন্যতা থাকতে পারে, যাতে আইনের প্রকৃত অর্থ প্রকাশিত নাও হতে পারে। এরূপ ক্ষেত্রে আক্ষরিক ব্যাখ্যার চেয়ে কার্যভিত্তিক বা যুক্তিভিত্তিক ব্যাখ্যার সাহায্য নেয়াই উচিত বলে স্যামণ্ড মনে করেন। বিধিবদ্ধ আইন ব্যাখ্যার কোন ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। তবে সাধারণ মূলনীতি মোটামুটি নিম্নরূপঃ
(১) লর্ড সাইমনের মতে, আইনের শব্দাবলীকে প্রাথমিক দৃষ্টিতে এগুলোর সাধারণ অর্থ দিতে হবে।
(২) প্রণীত আইনের নীতি ও লক্ষ্য অনুসারে ব্যাখ্যা করা উচিৎ। তবে আইনের ভাষা বা এর কোন শব্দের পরিবর্তন করা যাবে না৷
(৩) জনসাধারণের প্রচলিত অর্থেই প্রণীত আইনের শব্দগুলোর ব্যাখ্যা দেয়া প্রয়োজন।
(৪) সংবিধির ভাষা সুস্পষ্ট হলে এর পরিণতি যাই হোক না কেন তা অবশ্যই প্রয়োগ করতে হবে।
(৫) সংবিধিকে এমনভাবে ব্যাখ্যা দিতে হবে যেনো, অসঙ্গতি পরিহার করা যায় এবং আন্তর্জাতিক আইন ও রীতিনীতির পরিপন্থী না হয়।
(৬) লর্ড হ্যালসবেরীর মতে, প্রণীত সংবিধিটি সামগ্রিকভাবে বিবেচনা করতে হবে এর অংশ বিশেষ ব্যাখ্যা করা উচিত নয়।
(৭) সংবিধির কোন বিচ্যুতি বা শূন্যতা পূরণ করা আদালতের কাজ নয়, আইনসভার কাজ।
0 মন্তব্যসমূহ