বাংলা বানানে শ, ষ, স-এর ব্যবহারঃ তৎসম শব্দের বানানে শ, ষ, স-এর নিয়ম মেনে চলতে হবে। এছাড়া অন্য কোনো ক্ষেত্রে সংস্কৃতের ষত্ববিধি প্রযোজ্য হবে না।
বিদেশি মূল শব্দে শ, স-এর প্রতিষঙ্গী বর্ণ বা ধ্বনি রয়েছে, বাংলা বানানে তাই ব্যবহার করতে হবে। যেমন- সাল (বৎসর), সন, হিসাব, শহর, শরবত, শামিয়ানা, শখ, শৌখিন, মসলা, জিনিস, আপোস, সাদা, পোশাক, বেহেশত, নাশতা, কিশমিশ, শরম, শয়তান, শার্ট, স্মার্ট ইত্যাদি।
তবে পুলিশ শব্দটি ব্যতিক্রমরূপে শ দিয়ে লেখা হবে।
তৎসম শব্দে ট, ঠ বর্ণের পূর্বে ষ হয়। যেমন— বৃষ্টি, দুষ্ট, নিষ্ঠা, পৃষ্ঠা প্রভৃতি। কিন্তু বিদেশি শব্দে এক্ষেত্রে স ব্যবহার হবে। যেমন- স্টল স্টাইল, সিমান, স্টুডিও, স্টেশন, স্কোর, স্ট্রিট হত্যাদি।
কিন্তু খ্রিষ্ট যেহেতু বাংলায় আত্তীকৃত শব্দ এবং এর উচ্চারণও হয় তৎসম কৃষ্টি, তুষ্ট ইত্যাদি শব্দের মতো, তাই ষ্ট দিয়ে খ্রিষ্ট শব্দটি লেখা হবে।
ইংরেজি ও ইংরেজির মাধ্যমে আগত বিদেশি s বর্ণ বা ধ্বনির জন্য স এবং sh, -sion, -ssion, -tion ইত্যাদি বর্ণগুচ্ছ বা ধ্বনির জন্য শ ব্যবহার হবে। তবে question জাতীয় শব্দের বানানের পদ্ধতি ভিন্নরূপ। যেমন- কোএচ্ হতে পারে।
আরবি, ফারসি শব্দে সা (ث) সিন (س), সোয়াদ (ص) বর্ণগুলো প্রতিবর্ণরূপে স এবং শিন (ش)-এর প্রতিবর্ণরূপে শ ব্যবহার হবে। যেমন- সালাম, তসলিম, ইসলাম, মুসলিম, মুসলমান, সালাত, এশা, শাবান, শাওয়াল, বেহেশত ইত্যাদি।
এক্ষেত্রে স-এর পরিবর্তে ছ লেখার প্রবণতা দেখা যায়, তা ঠিক নয়। তবে যেখানে বাংলায় বিদেশি শব্দের বানান সম্পূর্ণ পরিবর্তিত হয়ে স ছ-এর রূপ লাভ করেছে, সেখানে ছ ব্যবহার করাই বাঞ্ছনীয়। যেমন- পছন্দ, মিছিল, মিছরি, তছনছ ইত্যাদি।
0 মন্তব্যসমূহ