অভিপেক্ষপের জন্য ‘স্কেল বা মাপনী’ নির্ণয় পদ্ধতি বর্ণনা কর


প্রশ্ন: অভিপেক্ষপের জন্য ‘স্কেল বা মাপনী’ নির্ণয় পদ্ধতি বর্ণনা করুন।

ভূমিকা: মানচিত্র বা ভূগোল সম্পর্কিত যেকোনো গবেষণা বা বিশ্লেষণে তথ্যকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করার জন্য স্কেল বা মাপনী ব্যবহার করা হয়। স্কেল হলো সেই অনুপাত যা প্রকৃত পৃথিবীর দূরত্ব, ব্যাসার্ধ বা পরিধি ক্ষুদ্র রূপে মানচিত্রে প্রদর্শন করে। অন্যদিকে, সামাজিক বিজ্ঞান বা মনোবিজ্ঞানেও অভিপেক্ষপ (attitude) পরিমাপের জন্য বিভিন্ন স্কেল বা মাপনী ব্যবহৃত হয়, যা অংশগ্রহণকারীর মনোভাব, মূল্যবোধ বা অনুভূতি নির্ণয় করে। এই দুই ক্ষেত্রেই মূল উদ্দেশ্য হলো প্রকৃত বা মানসিক মানকে পরিমাপযোগ্য রূপে রূপান্তর করা।

মূল বিষয়:

  1. অভিক্ষেপের জন্য স্কেল (Map Projection Scale):

    • স্কেল সাধারণত অনুপাত বা প্রতিভাগে (ratio/fraction) দেওয়া হয়, যেমন ১:১৫০,০০০,০০০।

    • এর মানে হলো, পৃথিবীর প্রকৃত ১৫০,০০০,০০০ ইঞ্চি বা সেন্টিমিটার মানচিত্রে ১ ইঞ্চি বা ১ সেন্টিমিটার হিসেবে প্রদর্শিত হবে।

    • স্কেল নির্ধারণের সময় ইউনিট (ইঞ্চি, সেন্টিমিটার, মাইল বা কিমি) যেকোনো ধরা যেতে পারে।

    • প্রদত্ত স্কেল ব্যবহার করে ব্যাসার্ধ নির্ণয় করা যায়।

    • নিরক্ষরেখা বা পরিধির দৈর্ঘ্য নির্ণয়ের সূত্র:
      পরিধি=2πr\text{পরিধি} = 2 \pi r
      স্কেলের সাহায্যে যেকোনো দূরত্ব বা কোণ মানচিত্রে নির্ধারণ করা সম্ভব।

সারণি : অভিক্ষেপের স্কেল, ব্যাসার্ধ এবং নিরক্ষরেখার দৈর্ঘ্য

স্কেল (Scale)

ব্যাসার্ধ (r) (ইঞ্চি/সেমি)

নিরক্ষরেখার দৈর্ঘ্য (2πr) (ইঞ্চি/সেমি)

1 : 50,000,000

৩১.৪৩

1 : 100,000,000

২.৫

১৫.৭১

1 : 125,000,000

১২.৫৭

1 : 140,000,000

১.৭৮

১১.১৯

1 : 145,000,000

১.৭২

১০.৮১

1 : 150,000,000

১.৬৭

১০.৫০

1 : 155,000,000

১.৬১

১০.১২

1 : 158,000,000

১.৫৮

৯.৪৩

1 : 160,000,000

১.৬৫

৯.৮১

1 : 163,000,000

১.৫৩

৯.৬২

1 : 165,000,000

১.৫১

৯.৪৯

1 : 167,000,000

১.৫

৯.৪৩

1 : 168,000,000

১.৪৯

৯.৩৬

1 : 170,000,000

১.৪৭

৯.২৪

1 : 200,000,000

১.২৫

৭.৮৬

1 : 225,000,000

১.১১

৬.৯৮

1 : 250,000,000

৬.২৯

1 : 255,000,000

০.৯৮

৬.১৬

1 : 260,000,000

০.৯৬

৬.০৩

1 : 265,000,000

০.৯৮

৫.৯১

1 : 270,000,000

০.৯২

৫.৭৮

1 : 290,000,000

০.৮৭

৫.৪৭

1 : 300,000,000

০.৮৩

৫.২২

1 : 500,000,000

০.৫

৩.১৪


  1. অভিপেক্ষপ পরিমাপের জন্য স্কেল (Attitude Scale):

    • সামাজিক বা মনোবৈজ্ঞানিক গবেষণায় ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর মনোভাব পরিমাপের জন্য স্কেল ব্যবহার করা হয়।

    • জনপ্রিয় পদ্ধতিগুলো হলো:

      • লাইকট স্কেল (Likert Scale): অংশগ্রহণকারী কোন বক্তব্যের সাথে কতটা একমত তা ৫–৭ স্তরের মানে প্রকাশ করে।

      • থারস্টোন স্কেল (Thurstone Scale): বিশেষজ্ঞ দ্বারা মূল্যায়িত বিবৃতির মাধ্যমে মনোভাব নির্ণয়।

      • গাটম্যান স্কেল (Guttman Scale): হায়ারারকিক্যাল ধাপের মাধ্যমে সমর্থন পরিমাপ।

      • সামান্টিক ডিফারেনশিয়াল স্কেল (Semantic Differential): দ্বান্দ্বিক বিশেষণের মাধ্যমে অনুভূতি বা মান নির্ধারণ।

    • সব ক্ষেত্রে মূল উদ্দেশ্য হলো অমূর্ত মনোভাবকে সংখ্যায় রূপান্তরিত করা

উপসংহার: স্কেল বা মাপনী হল এমন একটি সরঞ্জাম যা প্রকৃত বা মানসিক মানকে পরিমাপযোগ্য রূপে রূপান্তরিত করে, যেন তা বিশ্লেষণ ও তুলনামূলকভাবে উপস্থাপন করা যায়। মানচিত্রবিদ্যায় এটি পৃথিবীর দৈর্ঘ্য, ব্যাসার্ধ ও কোণ নির্ধারণে ব্যবহৃত হয়, আর সামাজিক বিজ্ঞানে এটি ব্যক্তির অভিপেক্ষপ বা মনোভাব নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয়। সুতরাং, স্কেল নির্ধারণ বা ব্যবহারের দক্ষতা গবেষণার সঠিকতা ও তথ্যের স্পষ্টতা নিশ্চিত করে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

টপিক