এলিট তত্ত্ব কি?


প্রশ্ন : এলিট তত্ত্ব কি?

ভূমিকা : আধুনিক যুগে সরকার ও রাজনীতির গভীর বিশ্লেষণ এবং অনুধাবনের জন্য বহু নতুন তত্ত্ব আবির্ভূত হয়েছে। এর মধ্যে এলিট তত্ত্ব অন্যতম। রাজনীতির গতানুগতিক ধারা থেকে ভিন্ন আঙ্গিকে রাজনৈতিক বাস্তবতা ব্যাখ্যা করার জন্য এলিট তত্ত্ব বিশেষভাবে আলোচিত।

এলিট তত্ত্ব : ‘এলিট’ শব্দের আভিধানিক অর্থ উৎকৃষ্ট শ্রেণীর ব্যক্তিবর্গ। সমাজে যারা বিশেষ স্থান অধিকার করে, মান-সম্মান, প্রভাব ও প্রতিপত্তি বিস্তার করে থাকে, তাদেরই বলা হয় এলিট।

এলিট তত্ত্বের মূল বক্তব্য হলো—

  • প্রতিটি সমাজে দু’টি প্রধান শ্রেণি বিদ্যমান :
    ১। সংখ্যায় অল্প (মুষ্টিমেয়) ব্যক্তিবর্গ—যাদের মধ্যে দক্ষতা, নেতৃত্বের গুণাবলি ও শাসনক্ষমতা রয়েছে।
    ২। সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ জনগণ—যারা নেতৃত্ব মেনে চলে বা শাসিত হয়।

অতএব, সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করে সবসময়ই একটি ক্ষুদ্র সংখ্যালঘু গোষ্ঠী বা এলিট, আর সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ তাদের দ্বারা পরিচালিত হয়।

সংজ্ঞা :

  • লাসওয়েল (Lasswell): “Elites are the power holders of a body politic.”

  • সি. রাইট মিলস (C. Wright Mills): “Elites are those who hold the leading positions in the strategic hierarchies.”

  • টি. বি. বটোমোর (T. B. Bottomore): “এলিট কথাটি সাধারণত কার্যগত বা পেশাগত গোষ্ঠীগুলোর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, যারা সমাজে উচ্চ মর্যাদার অধিকারী।”

উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার আলোকে বলা যায়, এলিট তত্ত্বের মূল বক্তব্য হলো—প্রত্যেক সমাজেই একটি ক্ষুদ্র এলিট শ্রেণি রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থা পরিচালনা করে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, আর সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ তাদের দ্বারা শাসিত হয়। সুতরাং রাজনৈতিক জীবনের প্রকৃতি ও গতি-প্রকৃতি বোঝার জন্য এলিটদের কার্যকলাপ বিশ্লেষণ অপরিহার্য।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

টপিক